মহাসড়কের যেন ময়লার ভাগাড়, হুমকিতে পরিবেশ

মহাসড়কের যেন ময়লার ভাগাড়, হুমকিতে পরিবেশ

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ ঃ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ অংশে প্রায় ২০টি স্থানে ময়লার স্তূপ। আশপাশের হাটবাজার, মাছ ও সবজির আড়তসহ বাসাবাড়ির ময়লা ফেলা হয় এখানে। ভুলতা ফ্লাইওভারের আশপাশেও একই অবস্থা। যেখানে সেখানে এসব ময়লা ফেলায় হুমমিকর মুখে পড়েছে এলাকার পরিবেশ।
প্রকাশ্যে ময়লা ফেললেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পথে পথে ময়লার ভাগাড় জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ময়লার দুর্গন্ধে মহাসড়ক দিয়ে চলাচলরত যানবাহনের যাত্রী কিংবা পথচারীদের নাকে রুমাল চেপে চলতে হয়। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে পড়ে।
সরেজমিন দেখা যায়, ভুলতা ও গোলাকান্দাইল এলাকার বিসমিল্লাহ সবজির আড়ত, গাউছিয়া মাছের আড়ত, তাঁতবাজার, রেস্টুরেন্ট, ফুটপাত ও মার্কেটগুলোর ময়লা-আবর্জনা প্রতিদিন ভ্যানে করে ঢাকা-সিলেট ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে।
উপজেলার রূপসী, বরপা, বরাব, বিশ্বরোডসহ যেসব স্থানে ময়লা ফেলা হয়, সেখানে রয়েছে বাসস্ট্যান্ড। ময়লার দুর্গন্ধে বাসস্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন। তাদের অভিযোগ–তারাব পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা সময়মতো এখানকার ময়লা পরিষ্কার করেন না।
এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে খাল রয়েছে। কলকারখানা, হোটেল, বাড়িঘরের যত ময়লা-আবর্জনা এনে এখানে ফেলা হয়। সেখান থেকে ভ্যানে বা গাড়িতে করে নেওয়া হয় মহাসড়কের পাশে।
রহিম উদ্দিন নামের এক পথচারী বলেন, ‘আমার বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী থানার গজারিয়া এলাকায়। আমি গোলাকান্দাইল বাসস্টেশনে নেমে পচা দুর্গন্ধে বমি করে দিয়েছি। আমার মতো অনেকে এই স্টেশনে নেমে দুর্গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়ে। জনবহুল ও মহাসড়কের পাশ থেকে ময়লার স্তূপ সরানোর দাবি জানাই।’
রিনা ইসলাম নামের এক গৃহিণী বলেন, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকা থেকে গাড়িতে করে কোথাও গেলে বাসস্টেশনে অপেক্ষা করতে হয়। ময়লার দুর্গন্ধে এখানে দাঁড়ানো যায় না। অসুস্থ হয়ে পড়তে হয়।’ নির্জন কোনো স্থানে ময়লা ফেলার দাবি করেন এই গৃহিণী।
ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘ময়লার দুর্গন্ধে ছাত্রছাত্রীদেরও সমস্যা হয়। সড়কের দুই পাশসহ ফ্লাইওভারটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে সবার জন্যই ভালো।
ময়লা ফেলা প্রসঙ্গে গাউছিয়া মাছের আড়তের সভাপতি নিবা দাস বলেন, ‘অনেকেই ময়লা-আবর্জনা ফেলে, তাই আমরাও ফেলি।’ দুর্গন্ধে নিজেদেরও সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা এখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে, তাদের সঙ্গে বসে বিকল্প একটা ব্যবস্থা করা হবে।’
এ ব্যাপারে গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান তুহিন বলেন, কয়েক দিন পরপরই উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভুলতা ও গোলাকান্দাইল এলাকার মহাসড়কের দুপাশ এবং ফ্লাইওভারের নিচে আমরা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করাচ্ছি। কিন্তু বারবার সতর্ক করার পরও এসব স্থানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। মার্কেট, আড়তদার ও হাটবাজারের মালিকদের পরিষদের পক্ষ থেকে নোটিস দেওয়ার পরও তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল হক বলেন, ময়লা-আবর্জনা অপসারণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  ###

আপনি আরও পড়তে পারেন